আরও দেখুন
চলতি সপ্তাহজুড়ে মার্কিন ভোক্তা মূল্য সূচক ও উৎপাদক মূল্য সূচক, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের ভোক্তা মনোভাব সূচক, মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশা সূচক (একই বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা প্রকাশিতব্য), এবং আমদানি মূল্য সূচক প্রকাশিত হবে। এগুলো হলো মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি নির্ধারণে প্রধান সূচক — কেবল মাসের শেষে প্রকাশিতব্য কোর PCE সূচক এই তালিকা থেকে বাদ রয়েছে।
তবে, অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে এমন কিছু অন্যান্য ইভেন্ট রয়েছে যা EUR/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে, বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্য 70-পয়েন্টের রেঞ্জের মধ্যে ওঠানামা করছে।
সোমবার
সপ্তাহটি শুরু হবে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিয়ে। জুন মাসে দেশটির আমদানি বৃদ্ধির হার পূর্ববর্তী মাসের 4.8%-এর তুলনায় বার্ষিক ভিত্তিতে 5.0%-এ পৌঁছাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। আমদানি মে মাসে 3.4%-এ হ্রাসের পর 1.3% বৃদ্ধি পেতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
যদি আসন্ন প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাস ছাড়িয়ে যায় বা তার বেশি হয়, তবে তা নির্দেশ করবে:
এই ধরনের ফলাফল সামগ্রিকভাবে ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা বাড়িয়ে ইউরোকে পরোক্ষভাবে সহায়তা করতে পারে।
ট্রেডারদের জন্য আরেকটি আগ্রহের বিষয় হতে পারে বুন্ডেসব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদন। যদিও ব্যাংকটির হকিশ বা কঠোর অবস্থান ইউরোকে সমর্থন দিতে পারে, তবে সাধারণত এই প্রতিবেদনের ফলাফল EUR/USD-এর ওপর সীমিত প্রভাব ফেলে।
মঙ্গলবার
এই দিনটি EUR/USD ট্রেডারদের জন্য সপ্তাহের সবচেয়ে ব্যস্ত দিন হতে পারে।
দিনটি শুরু হবে চীনের দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদন দিয়ে —যা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা যা ঝুঁকি গ্রহণ না করার বা ঝুঁকি গ্রহণ করার প্রবণতার মাধ্যমে ডলার পেয়ারের মূল্যের প্রবল অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
স্মরণযোগ্য যে, প্রথম প্রান্তিকে চীনের অর্থনীতি 5.4% হারে বৃদ্ধি পায়, যা অধিকাংশ বিশ্লেষকের পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গিয়েছিল। অন্যান্য উপাদানগুলোও পূর্বাভাস অতিক্রম করে, যা নির্দেশ করে যে প্রণোদনা পদক্ষেপ কার্যকর ছিল, যদিও প্রান্তিকে ভিত্তিতে মাত্র 1.2% বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুযায়ী দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপি বৃদ্ধি পেয়ে 5.1%-এ পৌঁছাতে পারে। এটি চীনে ধীর কিন্তু স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধিকে নির্দেশ করবে। যদি ফলাফল 5.0%-এর নিচে আসে, তবে তা প্রণোদনার প্রভাব স্বল্পমেয়াদি এবং দুর্বল ছিল বলে ইঙ্গিত দেবে, যেখানে আমদানি ঝুঁকি এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয়ের দুর্বলতা রয়ে গেছে। তবে, যদি আসন্ন প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বের ফলাফলের সমতুল্য বা বেশি হয়, তাহলে EUR/USD পেয়ারের ক্রেতারা ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতার বৃদ্ধি থেকে ব্যাপক সুবিধা পাবে।
ইউরোপীয় সেশনে ZEW সূচকসমূহ প্রকাশিত হবে। ইতিবাচক প্রবণতা আশা করা হচ্ছে:
এই ফলাফলগুলো ইউরোকে সমর্থন করবে, কারণ ZEW থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফল ইসিবিকে অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের নীতি অবলম্বনের জন্য আরও যুক্তি প্রদান করবে, এবং সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে সহায়ক হবে।
মার্কিন সেশনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি সূচক ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রকাশিত হবে। বিশ্লেষকরা আশা করছেন:
তাত্ত্বিকভাবে, এই ফলাফল ডলারকে সমর্থন দিতে পারে। তবে, ফেডের জুন মাসের সভার কার্যবিবরণীতে (গত সপ্তাহে প্রকাশিত) দেখা গিয়েছে যে ফেডের সদস্যরা শুল্ক-জনিত মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবকে "অস্থায়ী বা সীমিত" হিসেবে বিবেচনা করছেন। বেশিরভাগ সদস্য এখনও নমনীয় মুদ্রানীতির পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেছে। ফলে, CPI-এর মাঝারি মাত্রার বৃদ্ধি ডলারের জন্য সীমিত বা সাময়িকভাবে সহায়তা প্রদান করতে পারে।
বিপরীতে, যদি আসন্ন প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে ডলার প্রবল চাপের মধ্যে পড়তে পারে, কারণ সেপ্টেম্বরে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
মঙ্গলবারের প্রধান বক্তাগণ: ফেডের গভর্নর মাইকেল ব্যার এবং মিশেল বোম্যান।
বুধবার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি নির্ধারণে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক — উৎপাদক মূল্য সূচক (PPI) প্রকাশ করা হবে। পূর্বাভাস:
এই প্রতিবেদনের ফলাফল ভোক্তা মূল্য সূচকের ফলাফলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে পারে বা তার বিপরীতও হতে পারে, যা নির্ভর করছে ফলাফলের ওপর।
এছাড়াও বুধবার:
বৃহস্পতিবার
এদিন EUR/USD-র জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনে হবে জুন মাসের মার্কিন খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন:
এছাড়াও বৃহস্পতিবার:
শুক্রবার
সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিং 18 জুলাইয়ে ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান থেকে ভোক্তা মনোভাব সূচক প্রকাশিত হবে:
টেকনিক্যাল চিত্র
D1 টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য মধ্য ও উপরের বোলিঞ্জার ব্যান্ডের মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে; যা ইচিমোকু কুমো ক্লাউডের উপরে অবস্থিত, তবে টেনকান-সেন ও কিজুন-সেন লাইনের মাঝখানে।
এই সেটআপে স্পষ্ট টেকনিক্যাল সিগন্যাল অনুপস্থিত। পুরো সপ্তাহজুড়ে 1.1680–1.1750 রেঞ্জে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, যা ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দোদুল্যমানতা প্রতিফলিত করে।
শুধুমাত্র যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.1750-র উপরে (D1-এ টেনকান-সেন লাইনের উপরে) কনসোলিডেট করে তাহলে লং পজিশনের কথা ভাবা যেতে পারে, যা ইচিমোকু ইন্ডিকেটরে একটি বুলিশ "প্যারেড অফ লাইনস" সিগন্যাল সৃষ্টি করবে। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকার ক্ষেত্রে পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1870 (D1-এ উপরের বোলিঞ্জার ব্যান্ড)।
ট্রেন্ড রিভার্সালের নিশ্চিতকরণ মিলবে কেবল যদি বিক্রেতারা মূল্যকে 1.1600 (কিজুন-সেন লাইন) লেভেলের নিচে নিয়ে যেতে পারে। তবে বর্তমান মৌলিক প্রেক্ষাপটে, 1.1680–1.1750 রেঞ্জের মধ্যেও লং পজিশন অধিক যৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হবে।