empty
 
 
15.12.2025 11:49 AM
মার্কিন ডলারের ক্রেতারা ফেড কর্মকর্তাদের বক্তব্য দ্বারা খুব বেশি আশ্বস্ত হননি

গত শুক্রবার মার্কিন ডলার ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেট-সংযুক্ত পেয়ারে দরপতনের শিকার হয়েছে, কারণ মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ প্রতিনিধি কর্তৃক প্রদত্ত বক্তব্যগুলো ডলারের ক্রেতাদের খুব বেশি আশাবাদী করতে পারেনি।

This image is no longer relevant

ক্লিভল্যান্ড ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বেথ হ্যাম্যাকের মন্তব্য অনুযায়ী, এটি স্পষ্ট যে তিনি মুদ্রাস্ফীতির হার আরও কমাতে সুদের হার কিছুটা কড়াকড়িভাবে বাড়ানোর পক্ষে। শুক্রবার সিনসিনাটিতে আয়োজিত এক ইভেন্টে হ্যাম্যাক বলেন, "এই মুহূর্তে আমাদের নীতিমালা নিরপেক্ষ অবস্থানের কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "আমি কিছুটা কঠিন অবস্থান নিতে চাই, যেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ম্যান্ডেটে থাকা মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের কার্যক্রমে আরও চাপ প্রয়োগ করা যায়।"

তবে এমন বক্তব্য সত্ত্বেও, ট্রেডাররা ইতিমধ্যে প্রত্যাশিত নীতিমালা পরিবর্তনের একটি বড় অংশকে মূল্যায়নে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছে। বিনিয়োগকারীরা হয়তো এখন অতি আগ্রাসীভাবে সুদের হারের বৃদ্ধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলো পর্যালোচনা করে মনে করছেন, আগামী মাসগুলোতে ফেড হয়তো বাধ্য হয়ে নিজেদের কঠোর অবস্থান নমনীয় করবে—যা বর্তমানে মার্কিন ডলারের দরপতনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে।

হকিশ বা কঠোর অবস্থানের প্রতি ফেডের এই সংশয়পূর্ণ মনোভাব সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল দ্বারা আরও উৎসাহিত হয়েছে, যেখানে শ্রমবাজারের দুর্বল পরিস্থিতি চিহ্নিত হয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে মার্কেটের ট্রেডাররা হয়তো হ্যাম্যাকের বক্তব্যকে প্রত্যাশার চেয়ে কম প্রভাবশালী মনে করেছেন, এবং এটাই মার্কেটে সীমিত প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যা হতে পারে।

স্মরণ করিয়ে দিই, গত সপ্তাহে ফেড কর্মকর্তারা টানা তৃতীয়বারের মতো সুদের হার কমিয়েছেন, যদিও বেশ কয়েকজন আঞ্চলিক ব্যাংক প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে এই হ্রাসের বিপক্ষে নিজ অবস্থান জানিয়েছেন। শিকাগো ফেড প্রেসিডেন্ট অস্টান গুলসবি এবং কানসাস সিটি ফেড প্রেসিডেন্ট জেফ স্মিড সরাসরি তাঁদের আপত্তি প্রকাশ করে বলেছেন, তারা সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে চেয়েছিলেন। ফেড বোর্ড অফ গভর্নরস-এর ছয়জন সদস্য তাঁদের প্রাথমিক পূর্বাভাসে জানিয়েছেন যে তাঁরাও সুদের হার হ্রাসের বিপক্ষে।

হ্যাম্যাক চলতি বছর নীতিগত সিদ্ধান্ত বিষয়ে ভোট প্রদান করবেন না, তবে ২০২৬ সালে তিনি ভোটাধিকার পাবেন। এই সপ্তাহে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত তিনি সমর্থন করেছেন কি না—জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি, বরং বলেছেন, "এটি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত, কারণ কর্মকর্তারা নিজ নিজ ম্যান্ডেট এবং তার প্রভাবভুক্ত দলের চাপের মধ্যে রয়েছেন।"

আরও স্মরণ করিয়ে দিই, গত মাসে ক্লিভল্যান্ড ফেডপ্রধান সতর্ক করেছিলেন যে হঠাৎ সুদের হার কমালে মুদ্রাস্ফীতি দীর্ঘ সময় ধরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার উপরে থাকতে পারে। তার আগে অক্টোবরে তিনি সুদের হার কমানোর বিরোধিতা করেছিলেন এবং ডিসেম্বরেও সুদের হার কমানোর পক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ দেখেননি।

হ্যাম্যাক আরও বলেছেন, তিনি মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট স্পষ্ট করতে সাহায্য করবে। মনে রাখা প্রয়োজন, ফেডারেল সরকারের অচলাবস্থার কারণে এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা বিলম্বিত হয়েছে।

EUR/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1750 লেভেলে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা উচিত। শুধুমাত্র এই লেভেলটি অতিক্রম করতে পারলে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1780-এর লেভেলে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। এরপর 1.1820 পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে, তবে বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.1855-এর লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই ট্রেডিং ইনস্ট্রুমেন্টটির মূল্য হ্রাস পায়, তাহলে আমি মূল্য 1.1715 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার প্রত্যাশা করছি। যদি সেখানেও কোনো ক্রেতা সক্রিয় না হয়, তাহলে এই পেয়ারের মূল্য পুনরায় 1.1685-এর লেভেলে নেমে যেতে পারে অথবা 1.1650 থেকে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

GBP/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, পাউন্ডের ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3375-এর নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স লেভেলে নিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই পেয়ারের মূল্য এই লেভেল অতিক্রম হলেই মূল্যের 1.3405-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে, যা ব্রেকআউট করে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার খুব সহজ হবে না। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3434 লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারে মূল্য হ্রাস ঘটে, তাহলে বিক্রেতারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3340-এ ফিরিয়ে আনতে চাইবে। যদি তারা এতে সফল হয়, তাহলে মূল্য এই রেঞ্জে নেমে আসার ফলে সেটি বুলিশ পজিশনের উপর গুরুতর ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য ধীরে ধীরে 1.3320 হয়ে সরাসরি 1.3285 লেভেলের দিকে নেমে যেতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.